Education info

বাংলা সংবাদ প্রতিবেদন লেখার নিয়ম

সাধারণত পত্রিকায় প্রকাশ করার জন্য সাংবাদিকরা সংবাদ প্রতিবেদন লিখে থাকেন। কিন্তু, অনেক সময় পরীক্ষায় সংবাদ প্রতিবেদন এসে থাকে। সংবাদ প্রতিবেদন লেখার নিয়ম জানা না থাকলে পরীক্ষায় উত্তর করতে পারবেন না।

আপনার পরীক্ষায় সংবাদ প্রতিবেদন আসলে কীভাবে লিখতে হবে তা জানতে পারবেন এই পোস্টে। আজ আপনাদের সাথে সংবাদ প্রতিবেদন লেখার নিয়ে আলোচনা করবো। পোস্টটি সম্পূর্ণ পড়লে সহজেই যেকোনো ধরনের সংবাদ প্রতিবেদন লিখতে পারবেন।

শুধু পরীক্ষার জন্য নয়, আপনি চাইলে যেকোনো পত্রিকায় প্রকাশ করার জন্য প্রতিবেদন লিখতে পারবেন। তো চলুন, বাংলা সংবাদ প্রতিবেদন লেখার নিয়ম জেনে নেয়া যাক।

সংবাদ প্রতিবেদন লেখার নিয়ম

সংবাদ প্রতিবেদন লেখার জন্য প্রথমেই শিরোনাম লিখতে হবে। শিরোনাম লেখার সময় অল্প শব্দের মাঝে লিখতে হবে। অল্পের মাঝে যেন পুরো প্রতিবেদনের মূল কথা উঠে আসে। সংবাদের মূল উপাদান (কে, কখন, কোথায়, কি) শিরোনামে অন্তর্ভুক্ত করার চেষ্টা করুন। এতে করে সংবাদ প্রতিবেদনের শিরোনাম দেখেই মানুষ বুঝতে পারবে যে প্রতিবেদনটি কোন বিষয়ে লেখা।

সংবাদপত্রে প্রকাশের জন্য প্রতিবেদন লেখার সময় শিরোনাম লেখার পর ভূমিকা লিখতে হবে। এখানে ছোট করে পুরো অংশের বর্ণনা লিখতে হবে। এরপর, মূলভাব লিখতে হবে। মূলভাব অংশে উক্ত প্রতিবেদন সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য লিখতে হবে। যে ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রতিবেদন লেখা হচ্ছে তা স্পষ্টভাবে এবং সম্পূর্ণ উল্লেখ করতে হবে। মূলভাব লেখার পর উপসংহার লিখে প্রতিবেদনটি লেখা সম্পন্ন করতে হবে।

সংবাদপত্রে প্রকাশের জন্য অনেক সময় প্রতিবেদন লিখে আবেদন করতে হয় পত্রিকার সম্পাদক বরাবর। যেকোনো গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করার জন্য সংবাদ প্রতিবেদন লেখার নিয়ম জানার জন্য নিচে উল্লেখ করে দেয়া সংবাদপত্রে প্রকাশের জন্য প্রতিবেদন লেখার নমুনাগুলো অনুসরণ করতে পারেন।

বাংলা সংবাদ প্রতিবেদন লেখার নিয়ম


সংবাদ প্রতিবেদন লেখার নিয়ম জানা থাকতে হবে। সংবাদপত্রে প্রকাশের জন্য প্রতিবেদন লেখার জন্য প্রতিবেদনটি হতে হবে সুস্পষ্ট এবং সম্পূর্ণ ঘটনার উপর ভিত্তি করে লেখা। নিচে সংবাদপত্রে প্রকাশের জন্য প্রতিবেদন লেখার নমুনা উল্লেখ করে দিয়েছি। এই নিয়ম অনুসরণ করে যেকোনো পত্রিকার সম্পাদক বরাবর আবেদন করতে পারবেন আপনিও। এছাড়াও, এই নিয়মগুলো অনুসরণ করে পরীক্ষায় আসা প্রশ্নের উত্তর করতে পারবেন।

দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ে সংবাদ প্রতিবেদন

তারিখ: ০৪/০৩/২০২৪
বরাবর
সাধারণ সম্পাদক
যুগের আলো
কারওয়ান বাজার, ঢাকা
বিষয়: দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি সম্পর্কে প্রতিবেদন।

জনাব,
সবিনয় নিবেদন এই যে আপনার বহুল প্রচলিত “যুগের আলো” পত্রিকায় “দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে জনজীবনে নাভিশ্বাস” শীর্ষক প্রতিবেদনটি নির্দিষ্ট কলামে প্রকাশ করে আমাকে বাধিত করবেন।

বিনীত নিবেদক-

মোঃ ফারহান ইসলাম

কাচারি বাজার, খুলনা

দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে জনজীবনে নাভিশ্বাস

গত কয়েক মাস ধরে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে জনজীবনে চরম বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম আকাশচুম্বী হওয়ায় সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা অসহনীয় হয়ে পড়েছে। বাজারে চাল, ডাল, তেল, আটা, পেঁয়াজ, সবজি, মাংস, ইত্যাদির দাম দিন দিন বাড়ছে। এর ফলে নিম্ন আয়ের মানুষ, মধ্যবিত্ত শ্রেণী, এমনকি উচ্চবিত্ত শ্রেণীর মানুষও চরম ভোগান্তিতে পড়েছে।

মুদি দোকানে গেলে দেখা যায়, চালের দাম কেজিতে ১০-১৫ টাকা বেড়েছে। ডাল, তেল, আটার দামও অনেক বেড়েছে। পেঁয়াজ, সবজির দাম তো আকাশচুম্বী। বাজারে এক কেজি পেঁয়াজের দাম ১০০ টাকা ছাড়িয়ে গেছে। কিছুদিন আগে পেঁয়াজের দাম ২০০ টাকা ছাড়িয়ে গিয়েছিলো। মাংসের দামও অনেক বেড়েছে। এক কেজি গরুর মাংসের দাম ৭০০-৮০০ টাকা। ব্রয়লার মুরগির কেজি ২০০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। যেখানে পূর্বে এক কেজি ব্রয়লার মুরগির দাম ছিলো ১২০ টাকা।

এই অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির কারণে মানুষের জীবনযাত্রা চরমভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। অনেক পরিবারে তিনবেলা খাওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। অনেকেই আহার সংকটে ভুগছেন। এই পরিস্থিতিতে সরকারের পক্ষ থেকে বাজার নিয়ন্ত্রণের কোনো কার্যকর পদক্ষেপ দেখা যাচ্ছে না। বরং সরকারের মন্ত্রীরা বারবার বলছেন, বাজার স্বাভাবিকভাবেই নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে।

নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম লাগামহীনভাবে বেড়ে যাওয়ায় নিম্ন আয়ের মানুষের জীবনযাত্রা অসহনীয় হয়ে পড়েছে। তাদের সামর্থ্যের বাইরে চলে যাচ্ছে স্কুলের খরচ, বই-খাতা, পোশাক ইত্যাদির দাম। এই পরিস্থিতিতে শিশুরা বিভিন্ন ঝুঁকিপূর্ণ কর্মে নিয়োজিত হচ্ছে। ছোট ছোট বাচ্চারা ভারী কাজের সাথে যুক্ত হচ্ছে, যা তাদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশের জন্য ক্ষতিকর।

এই জটিল পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পেতে প্রয়োজন প্রশাসনের তীব্র তদারকি। ভোক্তা অধিদপ্তরের নিয়মিত বাজার তদারকি এবং অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। এছাড়াও জনগণকেও সচেতন হতে হবে। অতিরিক্ত মূল্য দিয়ে জিনিসপত্র কেনা থেকে বিরত থাকতে হবে। বাজারে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে মূল্যবৃদ্ধি করার অভিযোগে ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানাতে হবে।

প্রশাসনের দ্রুত পদক্ষেপ এবং জনগণের সচেতনতার মাধ্যমেই এই সমস্যার সমাধান সম্ভব। অন্যথায় জনগণের মধ্যে ক্ষোভ বৃদ্ধি পাবে এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে।

এই প্রতিবেদনের মাধ্যমে আমরা কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি এবং দ্রুত সমাধানের জন্য আহ্বান জানাচ্ছি। শিশুদের সুন্দর ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে হলে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করা অত্যাবশ্যক।

মোঃ ফারহান ইসরাক ( এলাকাবাসীর পক্ষ হতে)
কাচারি বাজার, খুলনা

উপরে উল্লেখ করে দেয়া সংবাদ প্রতিবেদন লেখার নিয়ম অনুসরণ করে অনেক সহজেই যেকোনো ধরনের প্রতিবেদন লিখতে পারবেন। প্রতিবেদন লেখার সময় অবশ্যই যে ঘটনা নিয়ে প্রতিবেদন লিখছেন তা সম্পূর্ণ লেখার চেষ্টা করবেন। এছাড়াও, প্রতিবেদনের ভাষা হতে হবে সুস্পষ্ট। উপরোক্ত নিয়ম অনুসরণ করে সংবাদপত্রে প্রকাশের জন্য প্রতিবেদন লিখতে পারবেন এবং পত্রিকার সম্পাদকের নিকট আবেদন করতে পারবেন।

খাদ্যে ভেজাল নিয়ে প্রতিবেদন

তারিখ: ০৪/০৩/২০২৪
বরাবর
সাধারণ সম্পাদক
যুগের আলো
কারওয়ান বাজার, ঢাকা
বিষয়: দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি সম্পর্কে প্রতিবেদন।

জনাব,
সবিনয় নিবেদন এই যে আপনার বহুল প্রচলিত “যুগের আলো” পত্রিকায় “দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে জনজীবনে নাভিশ্বাস” শীর্ষক প্রতিবেদনটি নির্দিষ্ট কলামে প্রকাশ করে আমাকে বাধিত করবেন।

বিনীত নিবেদক-

মোঃ ফারহান ইসলাম

কাচারি বাজার, খুলনা

খাদ্যে ভেজাল নিরসন 

বর্তমানে আমাদের খাদ্যব্যবস্থা ভেজালমুক্ত খাবার খুঁজে পাওয়া দায় করে তুলেছে। লোভী ব্যবসায়ীরা অতিরিক্ত লাভের আশায় রাসায়নিক দ্রব্য ব্যবহার করে খাদ্যদ্রব্যকে দীর্ঘস্থায়ী করছে, যা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর।

এই বিষাক্ত খাবার আমাদের শরীরে ক্যান্সার, কিডনি বিকল, ফুসফুসজনিত রোগ, উচ্চরক্তচাপ, এবং আরও অসংখ্য রোগের কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। এই ভয়াবহ পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পেতে আমাদের প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে হবে। তাদের অবশ্যই কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করে অসাধু ব্যবসায়ীদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে।

এছাড়াও, জনসচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে ভেজালমুক্ত খাবারের চাহিদা তৈরি করতে হবে। বাজারে কেনাকাটার সময় সচেতন থাকতে হবে এবং খাদ্যদ্রব্যের বিশুদ্ধতা সম্পর্কে নিশ্চিত হতে হবে।

পরিশেষে, সরকার এবং জনগণের সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমেই আমরা ভেজালমুক্ত খাবার নিশ্চিত করতে পারব এবং সুস্থ জীবনযাপন করতে পারব। নিচে উল্লিখিত পদক্ষেপগুলো অনুসরণ করার মাধ্যমে ভেজালমুক্ত খাবার নিশ্চিত করতে পারবো। 

  • কঠোর আইন প্রণয়ন ও প্রয়োগ
  • নিয়মিত বাজার মনিটরিং
  • ভোক্তা অধিদপ্তরের ক্ষমতা বৃদ্ধি
  • ভেজাল পরীক্ষার ল্যাবরেটরি স্থাপন
  • জনসচেতনতা বৃদ্ধি

খাদ্যে ভেজাল একটি জটিল সমস্যা যা আমাদের সকলের স্বাস্থ্যের জন্য হুমকিস্বরূপ। এই সমস্যা সমাধানে প্রশাসন ও সাধারণ জনগণের সম্মিলিত প্রচেষ্টা অত্যাবশ্যক।

বিনীত
মোঃ ফারহান ইসরাক(এলাকাবাসীর পক্ষ হতে)
কাচারি বাজার, খুলনা

আমাদের শেষ কথা

আজকের এই পোস্টে আপনাদের সাথে বাংলা সংবাদ প্রতিবেদন লেখার নিয়ম নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। পোস্টটি সম্পূর্ণ পড়লে যেকোনো সংবাদপত্রে প্রকাশের জন্য প্রতিবেদন লিখতে পারবেন। সংবাদ প্রতিবেদন লেখার নিয়মগুলো অনুসরণ করে যেকোনো ধরনের প্রতিবেদন লিখতে পারবেন। প্রতিবেদন লেখার সময় অবশ্যই প্রতিবেদনের জন্য আকর্ষণীয় একটি শিরোনাম ব্যবহার করবেন। এছাড়াও, পুরো ঘটনা বিস্তারিত এবং সুস্পষ্টভাবে লিখতে হবে।

Tag:

সংবাদ প্রতিবেদন লেখার নিয়ম pdf

সংবাদ প্রতিবেদন লেখার নিয়ম ssc 2023

সংবাদ প্রতিবেদন রচনা

বাংলা সংবাদ প্রতিবেদন লেখার নিয়ম

প্রতিবেদন লেখার নিয়ম ও নমুনা

প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিবেদন লেখার নিয়ম ও উদাহরণ

সংবাদ প্রতিবেদন লেখার নিয়ম class 10

নিজস্ব প্রতিবেদন লেখার নিয়ম

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button