Education info

প্রত্যয়ন পত্র লেখার নিয়ম

প্রত্যয়ন পত্র লেখার ক্ষেত্রে প্রত্যয়ন পত্র লেখার নিয়ম মেনে চলা জরুরি। এই নিয়মগুলো জানা না থাকলে পত্রটি অকার্যকর হতে পারে। এই পোস্টে আমরা প্রত্যয়ন পত্র লেখার সহজ নিয়ম এবং কিছু নমুনা শেয়ার করবো।

প্রথমে, পত্রের শুরুতে তারিখ ও প্রাপকের নাম উল্লেখ করতে হবে। এরপর বিষয় লিখে পত্রের মূল অংশে প্রবেশ করতে হবে। মূল অংশে যার জন্য প্রত্যয়ন দেওয়া হচ্ছে তার নাম, ঠিকানা, পেশা/পদবী ইত্যাদি তথ্য স্পষ্টভাবে উল্লেখ করতে হবে। এছাড়াও, কিসের জন্য প্রত্যয়ন দেওয়া হচ্ছে এবং সেই তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করতে হবে।

প্রত্যয়ন পত্র লেখার নিয়ম ,পত্রের শেষে প্রদানকারীর স্বাক্ষর, নাম, ঠিকানা এবং যোগাযোগের তথ্য দিতে হবে। প্রয়োজনে প্রতিষ্ঠানের সিলমোহরও ব্যবহার করা যেতে পারে। এভাবে করে অনেক সহজেই একটি প্রত্যয়ন পত্র লিখতে পারবেন। আপনার কাজের জন্য প্রত্যয়ন পত্র লিখুন কিংবা পরীক্ষায় আসা প্রশ্নের উত্তর করার জন্য প্রত্যয়ন পত্র লিখুন, নিয়ম অবশ্যই অনুসরণ করতে হবে।

তো চলুন, কীভাবে প্রত্যয়ন পত্র লিখতে হয় এবং প্রত্যয়ন পত্র লেখার সঠিক নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেয়া যাক।

প্রত্যয়ন পত্র কী

প্রত্যয়ন পত্র, যা ইংরেজিতে “Attestation” নামে পরিচিত, ব্যক্তির পরিচয়, চরিত্র এবং অন্যান্য প্রাসঙ্গিক তথ্যের সত্যায়িতকরণ করে। এটি মূলত এক ধরণের সনাক্তকরণ সার্টিফিকেট যা বিভিন্ন ক্ষেত্রে কাজের দলিল হিসেবে ব্যবহার করা হয়।

চাকরির আবেদন, ভিসার আবেদন, ঋণের আবেদন, পাসপোর্ট তৈরি, বৈবাহিক সনদপত্র, স্কুল-কলেজে ভর্তি, ইত্যাদি ক্ষেত্রে প্রত্যয়ন পত্রের প্রয়োজন হয়। এটি ব্যক্তির পরিচয় যাচাই, তার কর্মক্ষমতা ও আচরণ সম্পর্কে ধারণা প্রদান, এবং তার দাবি করা তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

চাকরি, ভিসা, ঋণ, এমনকি বিয়ের ক্ষেত্রেও প্রত্যয়ন পত্রের গুরুত্ব অপরিসীম। ব্যক্তির পরিচয়, চারিত্রিক গুণাবলী, শিক্ষাগত যোগ্যতা, কর্ম অভিজ্ঞতা, আর্থিক স্থিতিশীলতা – এসবের সত্যতা যাচাই করার ক্ষেত্রে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

প্রত্যয়ন পত্র লেখার নিয়ম, প্রত্যয়ন পত্র হলো এক ধরণের নথি যা একজন ব্যক্তির শিক্ষাগত যোগ্যতা, কর্ম অভিজ্ঞতা, পূর্ববর্তী প্রতিষ্ঠানে কর্মরত থাকাকালীন আচরণ এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ধারণ করে। এটি কোন ব্যক্তিকে কোন প্রতিষ্ঠানে কাজের জন্য সুপারিশ করার ক্ষেত্রেও ব্যবহার করা হয়।

প্রত্যয়ন পত্রের ধরণ

প্রত্যয়ন পত্র ব্যক্তির পরিচয়, যোগ্যতা এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্যের সত্যায়িতকরণ করে। জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে, যেমন চাকরির আবেদন, ভিসার আবেদন, ঋণের আবেদন, এমনকি বিয়েতেও প্রত্যয়ন পত্রের প্রয়োজন হয়। ক্ষেত্র বিশেষে প্রত্যয়ন পত্রের ধরণ পরিবর্তন হয়। নিচে প্রত্যয়ন পত্রের ধরণগুলো উল্লেখ করে দিলাম।

  1. জাতীয়তার প্রত্যয়ন পত্র
  2. চাকরির প্রত্যয়ন
  3. ‌শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রত্যয়নপত্র
  4. পুনঃর্বিবাহ মর্মে প্রত্যয়ন পত্র
  5. অবিবাহিত মর্মে প্রত্যয়ন পত্র
  6. বেকারত্বের প্রত্যয়ন পত্র
  7. ভুমিহীন মর্মে প্রত্যয়ন পত্র
  8. মুক্তিযোদ্ধা মর্মে প্রত্যয়ন পত্র
  9. কোম্পানির প্রত্যয়ন পত্র
  10. ‌চারিত্রিক প্রত্যয়ন পত্র
  11. মৃত্যুর প্রত্যয়ন পত্র
  12. উপজাতি মর্মে প্রত্যয়ন পত্র
  13. উত্তরাধিকার প্রত্যয়ন পত্র
  14. এতিম মর্মে প্রত্যয়ন পত্র
  15. ‌বিবাহিত মর্মে প্রত্যয়ন পত্র

এগুলো ছাড়াও আরও কয়েক ধরনের প্রত্যয়ন পত্র রয়েছে। প্রয়োজন ভেদে প্রত্যয়ন পত্রের ধরণ পরিবর্তন হয়ে থাকে। আপনি কী কারণে প্রত্যয়ন পত্র তৈরি করছেন তার উপর ভিত্তি করে এটি তৈরি করার ধরণও পরিবর্তন হবে।

প্রত্যয়ন পত্র লেখার নিয়ম

বিভিন্ন প্রয়োজনে প্রত্যয়ন পত্র লেগে থাকে। পরীক্ষায় আসা প্রশ্নের উত্তর করতে কিংবা প্রত্যয়ন পত্র তৈরি করতে নিচে উল্লেখ করে দেয়া প্রত্যয়ন পত্র লেখার নিয়মগুলো অনুসরণ করতে পারেন।

স্কুলের প্রত্যয়ন পত্র লেখার নিয়ম

আপনার পরীক্ষায় যদি স্কুলের প্রত্যয়ন পত্র লেখার জন্য প্রশ্ন এসে থাকে কিংবা আপনি আপনার স্কুলের জন্য একটি প্রত্যয়ন পত্র লিখতে চাচ্ছেন, তাহলে নিচে উল্লেখ করে দেয়া নমুনাটি অনুসরণ করে একটি প্রত্যয়ন পত্র লিখতে পারবেন।

দিনাজপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়
কলেজ রোড, দিনাজপুর

ডাকঘর: বড়বাড়ি, উপজেলা/ থানা: কোতওয়ালি, জেলা: দিনাজপুর, ক্রমিক নং: ১১২৮, বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার সন: ১৯৯৮, তারিখ: ১৭/০৩/২০২৪

প্রত্যয়ন পত্র

প্রত্যয়ন পত্র লেখার নিয়ম ,এই মর্মে প্রত্যয়ন করা যাচ্ছে যে, নাম: মোঃ আব্দুল ওয়াহিদ, পিতা: আব্দুল মজিদ বাদল, মাতা: মোছাঃ নাজমা বেগম, গ্রাম: কিশামত খলেয়া পোস্ট অফিস: ধনতোলা, থানা: গঙ্গাচড়া জেলা: গঙ্গাচড়া জন্ম তারিখ: ০২/০৩/২০০৫ কথায়: দুই মার্চ দুই হাজার পাঁচ রোল নং: ০২, অত্র বিদ্যালয় থেকে ২০২৪ শিক্ষাবর্ষে ৯ম শ্রেণীতে অধ্যয়নরত ছিল। ৯ম শ্রেণীতে তার অর্জিত ফলাফল: _________ প্রাপ্ত গ্রেড: ________ । সে পড়ালেখায় অনেক নিয়মিত এবং মেধাবী একজন শিক্ষার্থী। আমার জানা মতে সে রাষ্ট্র সমাজ বিরোধী কর্মকান্ডে জড়িত ছিলোনা এবং এখনও নেই। সে পরবর্তী শ্রেণীতে উত্তীর্ণ হওয়ার যোগ্য।

শ্রেণী শিক্ষকের স্বাক্ষর: ______ প্রধান শিক্ষকের স্বাক্ষর: ______ 

উপরোক্ত নমুনা অনুসরণ করে মাইক্রোসফট ওয়ার্ড অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করে আপনি সহজেই প্রত্যয়ন পত্র তৈরি করতে পারবেন। এছাড়াও, এটি প্রিন্ট করে আপনার প্রতিষ্ঠানের কাজে ব্যবহার করতে পারবেন। তবে, আপনি যদি পরীক্ষায় প্রশ্নের উত্তর করতে চান, তাহলে এই পদ্ধতিটি অনুসরণ করেই একটি প্রত্যয়ন পত্র লিখতে পারবেন। 

মাদ্রাসার প্রত্যয়ন পত্র লেখার নিয়ম

মাদ্রাসায় যদি পরীক্ষায় প্রত্যয়ন পত্র লিখতে বলে, কিংবা আপনার মাদ্রাসায় যদি প্রত্যয়ন পত্র প্রয়োজন হয়, তাহলে নিচে উল্লেখ করে দেয়া নমুনাটি অনুসরণ করে অনেক সহজেই একটি প্রত্যয়ন পত্র তৈরি করতে পারবেন। 

জুম্মাপাড়া কেন্দ্রীয় মাদ্রাসা
চট্টগ্রাম মাদ্রাসা বোর্ড
রংপুর, বাংলাদেশ

ডাকঘর: জুম্মাপাড়া, উপজেলা/ থানা: কোতওয়ালি, জেলা: রংপুর, ক্রমিক নং: ২২৩১, মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠার সন: ১৯৯৪, তারিখ: ১৭/০৩/২০২৪

প্রত্যয়ন পত্র

এই মর্মে প্রত্যয়ন করা যাচ্ছে যে, নাম: মোঃ আব্দুল ওয়াহিদ, পিতা: আব্দুল মজিদ বাদল, মাতা: মোছাঃ নাজমা বেগম, গ্রাম: কিশামত খলেয়া পোস্ট অফিস: ধনতোলা, থানা: গঙ্গাচড়া জেলা: গঙ্গাচড়া জন্ম তারিখ: ০২/০৩/২০০৫ কথায়: দুই মার্চ দুই হাজার পাঁচ রোল নং: ০২, অত্র বিদ্যালয় থেকে ২০২৪ শিক্ষাবর্ষে চট্টগ্রাম মাদ্রাসা বোর্ডের অধীনে অনুষ্ঠিত পরীক্ষায় জিপিএ ৫.০০ পেয়েছে। পূর্বের শ্রেণীতে তার অর্জিত ফলাফল: __________ প্রাপ্ত গ্রেড: _______ । সে পড়ালেখায় অনেক নিয়মিত এবং মেধাবী একজন শিক্ষার্থী। আমার জানা মতে সে রাষ্ট্র সমাজ বিরোধী কর্মকান্ডে জড়িত ছিলোনা এবং এখনও নেই। সে পরবর্তী শ্রেণীতে উত্তীর্ণ হওয়ার যোগ্য।

শ্রেণী শিক্ষকের স্বাক্ষর: ____ প্রধান শিক্ষকের স্বাক্ষর: ___ 

চাকরির প্রত্যয়ন পত্র লেখার নিয়ম

নতুন চাকরিতে যোগদানের পূর্বে পূর্ববর্তী প্রতিষ্ঠান থেকে একটি প্রত্যয়ন পত্র সংগ্রহ করা অত্যাবশ্যক। এই পত্রটি আপনার পূর্ববর্তী কর্ম অভিজ্ঞতা, দক্ষতা, কর্মদক্ষতা এবং আচরণের সত্যায়িতকরণ করে। অনেক প্রতিষ্ঠানই নিয়োগ প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে এই পত্রটি দাবি করে থাকে।

স্মারক নং: প্র. পি. কা/
তারিখ: ০৭/০৩/২০২৪

প্রত্যয়ন পত্র

এই মর্মে প্রত্যয়ন করা যাচ্ছে যে, নাম: মোঃ আব্দুল ওয়াহিদ, পিতা: আব্দুল মজিদ বাদল, মাতা: মোছাঃ নাজমা বেগম, গ্রাম: কিশামত খলেয়া পোস্ট অফিস: ধনতোলা, থানা: গঙ্গাচড়া জেলা: গঙ্গাচড়া জন্ম তারিখ: ০২/০৩/২০০৫ কথায়: দুই মার্চ দুই হাজার পাঁচ । তিনি একজন সৎ এবং নিষ্ঠাবান কর্মী হিসেবে আমার প্রতিষ্ঠানে কৃতিত্বের সহিত, বিগত ৭ বছর যাবত হিসাবরক্ষক পদে দায়িত্ব ও কর্তব্যরত ছিলেন। তার চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য এবং কর্মদক্ষতা অনেক ভালো।

আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে, উক্ত ব্যক্তি ভবিষ্যতে যে কোম্পানি/প্রতিষ্ঠানে নিযুক্ত হবেন, সেখানে তিনি নিষ্ঠা ও সততার সাথে তার সকল দায়িত্ব পালন করবেন।

স্বাক্ষর
সিলমোহর

শেষ কথা

আজকের এই পোস্টে আপনাদের সাথে প্রত্যয়ন পত্র লেখার নিয়ম এবং নমুনা নিয়ে আলোচনা করেছি। পোস্টটি সম্পূর্ণ পড়লে কীভাবে একটি প্রত্যয়ন পত্র লিখতে হয় সেটি জানতে পারবেন। জীবনের অনেক ক্ষেত্রেই প্রত্যয়ন পত্র প্রয়োজন হয়ে থাকে। তাই, এই পোস্টটি আপনার জন্য অনেক সহায়ক হবে বলে আশা করছি। আরও এমন তথ্য জানতে আমাদের ওয়েবসাইটটি প্রতিদিন ভিজিট করুন।

Tag:

স্কুলের প্রত্যয়ন পত্র লেখার নিয়ম

প্রত্যয়ন পত্র ফরমেট

প্রত্যয়ন পত্রের জন্য আবেদন

কোম্পানির প্রত্যয়ন পত্র লেখার নিয়ম

প্রত্যয়ন পত্র লেখার নিয়ম pdf

মাদ্রাসার প্রত্যয়ন পত্র লেখার নিয়ম

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button