Education info

অপটিক্যাল ফাইবার কাকে বলে এবং কত প্রকার ও কি কি

অপটিক্যাল ফাইবার কাকে বলে ,অপটিক্যাল ফাইবার হল একধরণের পাতলা, স্বচ্ছ তন্তু যা সাধারণত কাঁচ অথবা প্লাস্টিক দিয়ে তৈরি করা হয়। এটি আলো পরিবহনের জন্য ব্যবহৃত হয়। অপটিক্যাল ফাইবার কাকে বলে, অপটিক্যাল ফাইবার কাকে বলে এবং অপটিক্যাল ফাইবার নিয়ে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য নিয়ে আজকের এই পোস্ট।

ট্রান্সমিশন ক্যাবল প্রযুক্তির নতুন অধ্যায় উন্মোচন করেছে ফাইবার অপটিক ক্যাবল। অপটিক্যাল ফাইবার নামক পাতলা, স্বচ্ছ তন্তুগুলোর সমন্বয়ে তৈরি এই ক্যাবল ডেটা বহনের জন্য আলোর ব্যবহার করে। রাসায়নিকভাবে নিরপেক্ষ এবং আলো পরিবহনের উপযোগী ডাই-ইলেকট্রিক, সিলিকা বা মাল্টি কম্পোনেন্ট কাঁচের তৈরি এই ফাইবারগুলো তড়িৎ সিগন্যালের পরিবর্তে আলোক সিগন্যাল ট্রান্সমিট করে।

প্রতিটি ফাইবারকে প্লাস্টিকের স্তর দ্বারা আবৃত করে রাখা হয় এবং একটি প্রতিরক্ষামূলক টিউবে সুরক্ষিতভাবে স্থাপন করা হয়। ফলে বাহ্যিক হস্তক্ষেপ থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। ফাইবার অপটিক ক্যাবলের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য হলো এর উচ্চ ডেটা ট্রান্সমিশন গতি, দীর্ঘ দূরত্বে ডেটা বহনের ক্ষমতা এবং ইলেক্ট্রিক্যাল ইন্টারফিয়ারেন্স থেকে মুক্ত থাকা।

তো চলুন, অপটিক্যাল ফাইবার কি, অপটিক্যাল ফাইবার কাকে বলে এবং অপটিক্যাল ফাইবার আমরা দৈনন্দিন জীবনে কীভাবে ব্যবহার করছি এবং কী কী সুবিধা পাচ্ছি সেগুলো সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জেনে নেয়া যাক।

অপটিক্যাল ফাইবার কি

কাঁচ (সিলিকা) অথবা প্লাস্টিক দিয়ে তৈরি পাতলা, স্বচ্ছ এবং নমনীয় ফাইবার হলো অপটিক্যাল ফাইবার। মানুষের চুলের চেয়েও পাতলা এই ফাইবারগুলো আধুনিক যোগাযোগ ব্যবস্থার মেরুদণ্ড হিসেবে কাজ করে। ইন্টারনেট এবং ডেটা ট্রান্সমিশনের ক্ষেত্রে অপটিক্যাল ফাইবারের ব্যবহার দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।

অপটিক্যাল ফাইবার কাকে বলে

আলো, প্রতি সেকেন্ডে প্রায় 300 মিলিয়ন মিটার বেগে ছুটে চলা এক অপূর্ব শক্তির উৎস। ডিজিটাল বৈদ্যুতিক তরঙ্গকে সহজেই আলোক তরঙ্গে রূপান্তরিত করা সম্ভব, এবং আলোর অসাধারণ গতি ডেটা ট্রান্সমিশনের ক্ষেত্রে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এনেছে।

অপটিক্যাল ফাইবার হলো কাঁচ (সিলিকা) বা প্লাস্টিক দিয়ে তৈরি অত্যন্ত পাতলা কাচের তন্তু। মানুষের চুলের চেয়েও পাতলা এই ফাইবারগুলো আলো পরিবহনের জন্য ব্যবহৃত হয়।

আলোর অসাধারণ গতি এবং অপটিক্যাল ফাইবারের ব্যবহারের ফলে দ্রুত, নির্ভুল এবং দীর্ঘ দূরত্বে ডেটা ট্রান্সমিশন সম্ভব হয়েছে। আধুনিক যোগাযোগ ব্যবস্থার মেরুদণ্ড হিসেবে কাজ করে চলেছে এই অসাধারণ প্রযুক্তি।

অপটিক্যাল ফাইবার কত প্রকার

অপটিক্যাল ফাইবার বিভিন্ন মানদণ্ডের উপর ভিত্তি করে শ্রেণীবদ্ধ করা যেতে পারে। নিচে অপটিক্যাল ফাইবার কত প্রকার এবং কী কী তা উল্লেখ করে দেয়া হলো।

অপটিক্যাল ফাইবার কাকে বলে?

কোরের আকার অনুসারে অপটিক্যাল ফাইবারকে দুইভাবে বিভক্ত করা হয়ে থাকে। এগুলো হচ্ছে — 

  • মাল্টি-মোড ফাইবার: এই ধরনের ফাইবারের কোরের ব্যাস বড় (৫০-১২৫ মাইক্রোমিটার)। এতে একাধিক আলোর রশ্মি বিভিন্ন পথে প্রবাহিত হতে পারে।
  • সিঙ্গেল-মোড ফাইবার: এই ধরনের ফাইবারের কোরের ব্যাস ছোট (৮-১০ মাইক্রোমিটার)। এতে আলোর রশ্মি একক পথে প্রবাহিত হয়।

উপাদান অনুসারে অপটিক্যাল ফাইবারকে দুইভাবে বিভক্ত করা হয়ে থাকে। এগুলো নিচে উল্লেখ করে দেয়া হলো —

  • কাচের অপটিক্যাল ফাইবার: এটি সবচেয়ে সাধারণ ধরনের অপটিক্যাল ফাইবার।
  • প্লাস্টিকের অপটিক্যাল ফাইবার: এটি কাচের তুলনায় কম ব্যয়বহুল এবং নমনীয়, তবে কম ব্যান্ডউইডথ এবং দূরত্ব সহনশীল।

ফাইবার অপটিক্যাল ক্যাবল কি

অপটিক্যাল ফাইবার কেবল হলো অত্যন্ত পাতলা কাচের তন্তু, যা আলোর সাহায্যে ডেটা ট্রান্সমিট করে। এটি ইলেকট্রিক্যাল সিগন্যালের পরিবর্তে লাইট সিগন্যাল ব্যবহার করে, যার ফলে দ্রুত, নিরাপদ এবং দূর-দূরত্বে ডেটা আদান-প্রদান সম্ভব। সহজে এবং দ্রুত ডেটা ট্রান্সমিশন করার জন্য এখন সর্বক্ষেত্রেই ফাইবার অপটিক্যাল ক্যাবল ব্যবহার করা হচ্ছে। ইন্টারনেট সংযোগ, চিকিৎসা ক্ষেত্রে, ডেটা ট্রান্সমিশনে সহ আরও অনেক ক্ষেত্রেই অপটিক্যাল ফাইবার ক্যাবল এর ব্যবহার প্রতিনিয়ত বেড়েই চলেছে। 

অপটিক্যাল ফাইবারের ব্যবহার

কপার তারের মাধ্যমে ডেটা ট্রান্সমিশন বৈদ্যুতিক তরঙ্গের উপর নির্ভর করে। এই পদ্ধতিতে, সিগন্যাল প্রেরণের সময় পরিবেশের বিভিন্ন উপাদানের প্রভাবে ‘নয়েজ’ বা বিকৃতি দেখা দেয়।অপটিক্যাল ফাইবারের তুলনায় কপার তারের মাধ্যমে ডেটা ট্রান্সমিশন অনেক ধীর। কারণ, তড়িৎ সংকেতের গতি আলোর গতির তুলনায় অনেক কম।

এই কারণে, কপার তারের মাধ্যমে ডেটা ট্রান্সমিশনের সময় তথ্যের ক্ষয় অনিবার্য। ইনপুট হিসেবে প্রদত্ত তথ্যের পুরোপুরি আউটপুট পাওয়া সম্ভব হয় না। কপার বা অন্য ধাতব তারের মাধ্যমে পূর্ণাঙ্গ ডিজিটাল সিগন্যাল প্রেরণ করা অসম্ভব।

তাছাড়া, কপার তারের তুলনায় অপটিক্যাল ফাইবারের দাম কম এবং দীর্ঘস্থায়িত্ব বেশি হওয়ায় এর ব্যবহার দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। অপটিক্যাল ফাইবারের মাধ্যমে প্রেরিত সিগন্যালকে সহজেই ডিজিটাল সিগন্যালে রূপান্তর করা যায়।

অপটিক্যাল ফাইবার কাকে বলে? বিভিন্ন ক্ষেত্রে অপটিক্যাল ফাইবার ব্যবহার করা হয়। এছাড়াও, নতুন নতুন অনেক ক্ষেত্রে অপটিক্যাল ফাইবার এর ব্যবহার প্রতিনিয়ত বেড়েই চলেছে। অপটিক্যাল ফাইবার ব্যবহৃত হয় এমন কিছু উদাহরণ নিচে উল্লেখ করে দেয়া হলো।

চিকিৎসা ক্ষেত্রে অপটিক্যাল ফাইবারের ব্যবহার

চিকিৎসা ক্ষেত্রে অপটিক্যাল ফাইবারের ব্যবহার দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর উচ্চ ডেটা ট্রান্সমিশন গতি, দীর্ঘ দূরত্বে ডেটা বহন করার ক্ষমতা এবং ইলেক্ট্রিক্যাল ইন্টারফিয়ারেন্স থেকে মুক্ত থাকার কারণে এটি চিকিৎসা যন্ত্রপাতি ও বিভিন্ন প্রক্রিয়ার জন্য অপরিহার্য হয়ে উঠেছে।

চিকিৎসা ক্ষেত্রে যেমন এন্ডোস্কোপি যা অভ্যন্তরীণ অঙ্গ পরীক্ষা করার জন্য ব্যবহার করা হয়। এক্ষেত্রেও অপটিক্যাল ফাইবার ব্যবহার করা হচ্ছে। অপটিক্যাল ফাইবার ব্যবহার করে চিকিৎসা ক্ষেত্রে আরও অনেক কাজ করা হয়ে থাকে। যেমন –  লেজার সার্জারি, টিস্যু কাটা এবং সিল করার জন্য অপটিক্যাল ফাইবার ব্যবহার করা হচ্ছে।

টেলিযোগাযোগ ক্ষেত্রে যেমন- টেলিফোন, ইন্টারনেট, কেবল, টেলিভিশন ইত্যাদি ব্যবহারে অপটিক্যাল ফাইবার এর ব্যবহার বৃদ্ধি পেয়ে চলেছে। অপটিক্যাল ফাইবার ক্যাবল ব্যবহার করে টেলিযোগাযোগ কার্য সম্পাদন করা হচ্ছে।

ডেটা সেন্টার যেমন- কম্পিউটার নেটওয়ার্কিং এবং স্টোরেজ এর জন্য অপটিক্যাল ফাইবার ব্যবহার করা হচ্ছে। সাধারণ কপার তারের তুলনায় অপটিক্যাল ফাইবার অনেক দ্রুত ডেটা ট্রান্সমিশন করতে পারে জন্য এসব ক্ষেত্রে অপটিক্যাল ফাইবারের ব্যবহার বৃদ্ধি পাচ্ছে প্রতিনিয়ত। বিশেষ করে এক দেশ থেকে অন্য দেশে সমুদ্রের তলদেশ দিয়ে ইন্টারনেট আদান-প্রদান করতে অপটিক্যাল ফাইবার ব্যবহার করা হয়ে থাকে। 

অপটিক্যাল ফাইবার বাংলাদেশ

তথ্যপ্রযুক্তি ও টেলিকমিউনিকেশন ক্ষেত্রে, বাংলাদেশ অন্যান্য দেশের সাথে তাল মিলিয়ে অপটিক্যাল ফাইবারের ব্যবহার বৃদ্ধি করছে। ইন্টারনেট সংযোগ সরবরাহে এর ব্যবহার সবচেয়ে বেশি দেখা যাচ্ছে। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট, টেলিযোগাযোগ, নেটওয়ার্কিং, কম্পিউটার নেটওয়ার্কিং ইত্যাদি ক্ষেত্রেও অপটিক্যাল ফাইবার ব্যবহার করা হচ্ছে।

সরকারের লক্ষ্য দেশের ৬৪টি জেলা এবং সকল ইউনিয়ন পরিষদ (২৩শত) দ্রুতগতির ইন্টারনেট সেবার আওতায় আনা। এর জন্য অপটিক্যাল ফাইবার কেবল স্থাপনের কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। ফলে, প্রত্যন্ত অঞ্চলেও উচ্চগতির ইন্টারনেট সংযোগ প্রসারিত হচ্ছে, যা ডিজিটাল বাংলাদেশ থেকে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যমাত্রায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

দূর-দূরান্তরে ডিশ লাইন সংযোগ এবং উচ্চমানের ভিডিও সরবরাহের জন্য অপটিক্যাল ফাইবার ক্যাবল ব্যবহার করা হয়। আজকের দ্রুত ইন্টারনেটের পেছনেও অপটিক্যাল ফাইবারের অবদান অনস্বীকার্য। এই ফাইবারের কারণে দেশের যেকোনো স্থানে অল্প সময়ে ডেটা আদান-প্রদান করা সম্ভব হচ্ছে।

অপটিক্যাল ফাইবার শেয়ারিং কানেকশনের জন্যও ব্যবহৃত হয় কারণ এর ট্রান্সমিশন গতি অনেক বেশি। কেবল যোগাযোগ ব্যবস্থাতেই নয়, বহু বছর ধরে চিকিৎসা যন্ত্রপাতিতেও অপটিক্যাল ফাইবার ক্যাবল ব্যবহার করা হচ্ছে। এই অসাধারণ প্রযুক্তির সাহায্যে পৃথিবীর যেকোনো স্থানে সহজেই তথ্য আদান-প্রদান করা সম্ভব হচ্ছে।

শেষ কথা

আজকের এই পোস্টে আপনাদের সাথে অপটিক্যাল ফাইবার কি, অপটিক্যাল ফাইবার কাকে বলে এবং অপটিক্যাল ফাইবার এর ব্যবহার নিয়ে বিভিন্ন তথ্য শেয়ার করেছি। ডেটা ট্রান্সমিশন করার জন্য অপটিক্যাল ফাইবার এর ব্যবহার প্রতিনিয়ত বেড়েই চলেছে। পোস্টটি সম্পূর্ণ পড়লে অপটিক্যাল ফাইবার সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন। এমন আরও অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানতে আমাদের ওয়েবসাইটটি প্রতিনিয়ত ভিজিট করুন।

Tag:

অপটিক্যাল ফাইবার কাকে বলে class 8

অপটিক্যাল ফাইবার কত প্রকার

ফাইবার অপটিক্যাল ক্যাবল এর সুবিধা

অপটিক্যাল ফাইবার এর ব্যবহার সমূহ

অপটিক্যাল ফাইবার এর বৈশিষ্ট্য

অপটিক্যাল ফাইবার কাকে বলে class 6

চিকিৎসা ক্ষেত্রে অপটিক্যাল ফাইবারের ব্যবহার

অপটিক্যাল ফাইবার এর প্রতিসরাঙ্ক

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button